Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২১st ডিসেম্বর ২০২৩

প্রচলিত জ্বালানি শক্তি

বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের জন্য যে সমস্ত শক্তি বর্তমানে ব্যাপকভাবে বা প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়, তাদের প্রচলিত শক্তি বা চিরাচরিত শক্তি বলে। তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইত্যাদি হলো প্রচলিত শক্তির উদাহরণ। অন্যদিকে, অপ্রচলিত শক্তির উদাহরণ হলো সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ, ভূ-তাপ বিদ্যুৎ ইত্যাদি। কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদি প্রবাহমান সম্পদ নয়। অন্যদিকে সূর্যালোক, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্র তরঙ্গ ইত্যাদি প্রবাহমান সম্পদ। এগুলি বারবার ব্যবহার করলেও ফুরিয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। জীবাশ্ম জালানি হলো প্রচলিত শক্তির উৎস।

 

জীবাশ্ম জ্বালানি এমন এক প্রকার জ্বালানি যা বায়ুর অনুপস্থিতিতে অবাত পচন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। মৃত গাছের পাতা, মৃতদেহ ইত্যাদি হাজার হাজার বছর ধরে মাটির নিচে চাপা পড়ে এ জ্বালানি তৈরি হয়। এ প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তৈরি হতে মিলিয়ন বছর লাগে, সাধারণত ৬৫০ মিলিয়ন বছর বা ৬৫০০০০০০০ বছর সময় লাগে। জীবাশ্ম জ্বালানিতে উচ্চ পরিমাণে কার্বন থাকে। কয়লাপ্রাকৃতিক গ্যাসখনিজ তেল ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানি। জীবাশ্ম জ্বালানি পৃথিবীর সকল জায়গায় পাওয়া যায় না। যে দেশে পাওয়া যায় তার উপর অন্যান্য দেশ নির্ভর করে।

 

প্রধান প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানি

কয়লা

জীবাশ্ম জ্বালানির মধ্যে কয়লার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। কয়লা একটি জৈব পদার্থ। পৃথিবীতে একসময় অনেক গাছপালা ছিল। বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক পরিবর্তনে সেই সব গাছপালা মাটির নিচে চাপা পড়ে যায় এবং জমতে থাকে। গাছের পাতা ও কাণ্ড রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে কয়লায় পরিণত হয়।

প্রাকৃতিক গ্যাস

প্রাকৃতিক গ্যাস প্রচলিত শক্তির একটি অতি পরিচিত উৎস। প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায় ভূগর্ভে। পৃথিবীর অভ্যন্তরের প্রচন্ড চাপ ও তাপ এই উপাদান সৃষ্টির প্রধান কারণ। পেট্রোলিয়াম কূপ থেকেও প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায়। এই গ্যাসের প্রধান উপাদান মিথেন। প্রাকৃতিক গ্যাসের শতকরা ৬০-৯৫ ভাগ হল মিথেন

খনিজ তেল

পেট্রোলিয়াম একটি ল্যাটিন শব্দ। এই শব্দটি এসেছে দুটি ল্যাটিন শব্দ পেট্রো  ও অলিয়াম  মিলে। 'পেট্রো' অর্থ পাথর ও 'অলিয়াম' শব্দের অর্থ তেল। অর্থাৎ পেট্রোলিয়াম শব্দের অর্থ পাথরের তেল। টারশিইয়ারি যুগে অর্থাৎ আজ থেকে ৫-৬ কোটি বছর পূর্বে পাথরের স্তরে স্তরে গাছপালা ও সামুদ্রিক প্রাণী জমা পড়ে। কালে কালে তারাই খনিজ তেলে পরিণত হয়। আজকের স্থলভাগের অনেকটাই পূর্বে সমুদ্রের অন্তর্গত ছিল।

 

প্রয়োজনীয়তা

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান উপাদান কয়লা। কয়লা পুড়িয়ে সরাসরি তাপ পাওয়া যায়। এটি একটি অতি পরিচিত জ্বালানি। তবে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও এর আরো নানা ব্যবহার রয়েছে। কয়লা থেকে অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান পাওয়া যায়। এদের মধ্যে রয়েছে কোলগ্যাস, আলকাতরা, বেনজিন, অ্যামোনিয়া, টলুয়িন প্রভৃতি। রান্না করতে ও বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালাতে ব্যবহৃত হয় কয়লা। একসময় কয়লা জল পরিশোধনের জন্য ব্যবহৃত হত।

প্রাকৃতিক গ্যাস একসময় একটি অপ্রয়োজনীয় পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত হতো, যা পেট্রোলিয়ামের সাথে উৎপাদিত হতো। তবে বর্তমানে এটি একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদার্থ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার খুবই ব্যাপক। এর প্রধান ব্যবহার জ্বালানি হিসেবে। রান্নার কাজে এর ব্যবহার রয়েছে। তবে সিলিন্ডারে করে যে গ্যাস সরবরাহ করা হয় তা প্রধানত বিউটেন। অনেক সার কারখানায় এর ব্যবহার রয়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও এর ব্যবহার রয়েছে।

শক্তির অন্যতম পরিচিত উৎস খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়াম। বর্তমান সভ্যতায় এর ব্যবহার অনেক ব্যাপক। গ্রামের কুঁড়েঘর থেকে শুরু করে আধুনিক সভ্যতার পরিবহন ব্যবস্থা-সর্বত্রই এর অবদান রয়েছে। পেট্রোলিয়াম থেকে নিষ্কাশিত তেল পেট্রোল। পাকা রাস্তার ওপর দেয়া পিচ্‌, কেরোসিন ও চাষবাসের জন্য এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। তবে এর প্রধান ব্যবহার জ্বালানি হিসেবে। পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের প্রধান ব্যবহার তড়িৎ ও যান্ত্রিক শক্তির উৎপাদনে। পেট্রোলিয়াম থেকে আরো পাওয়া যায় নানান রকম প্রসাধনী যেমনঃ ক্যাশমিলনপলিয়েস্টারটেরিলিন

 

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও পরিবেশ দুষণ

জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ খুব বেশি ঘটে। একটি পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে কয়লা থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তড়িৎ আহরণে কর্মীদের মৃত্যুর হার পারমাণবিক রিয়াক্টরে কর্মীর মৃত্যুর হারের সমান।

গাড়িএরোপ্লেনজাহাজ ও ট্রেন চালাতে যে জ্বালানি ব্যবহৃত হয় তা প্রধানত জীবাশ্ম জ্বালানি (খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস)। মোটর গাড়ি ও কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া পরিবেশ দূষিত করে। এছাড়া কার্বন ডাইঅক্সাইড-এর পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। এছাড়া ঐ অঞ্চলের জীববৈচিত্রের ওপরও তা প্রভাব ফেলে।

 

পারমানবিক শক্তি

বর্তমান সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়ংকর বিষয় হল পরমাণু শক্তি । পরমাণুর নিউক্লিয়াস কে ভেঙ্গে বা বিভাজন করে যে শক্তি পাওয়া যায়, তাকে পারমাণবিক শক্তি বলে।
পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র হলো এমন এক ধরনের কেন্দ্র , যার কাজ পারমাণবিক বিক্রিয়া ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তাপশক্তি উৎপাদন করা। তাপশক্তি ব্যবহার করে বাষ্প উৎপাদন করা হয়।  বাষ্প দিয়ে চালানো হয় স্টিম টরবাইন, আর স্টিম টারবাইন দিয়ে তৈরী হয় বিদ্যুৎ।

সহজ কথায় , শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাই হলো পারমানবিক শক্তি কেন্দ্রের মূল কাজ। এছাড়াও বর্তমানে পারমানবিক শক্তিকে চিকিৎসা , উদ্ভিদ ও প্রাণীর জিন পরিবর্তনের কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক দেশ এটা দিয়ে মারণাস্ত্রও তৈরী করছে।

তেল, কয়লা এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো প্রচলিত শক্তির উৎসসমূহ  অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর শক্তি হিসাবে প্রমাণিত হলেও পরিবেশ এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য এই শক্তি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে কার্বন ভিত্তিক জ্বালানি দহনের ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জীব জগতের জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। মেরু অঞ্চলে অধিক পরিমান বরফ গলছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়াও কোস্টাল এরিয়া বা সমুদ্রবর্তী অঞ্চলসমূহ ডুবে যাবার উপক্রম হচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রচলিত জ্বালানি শক্তির বিকল্প হিসাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা জরুরি। কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে সাশ্রয়ী নবায়ন যোগ্য জ্বালানি শক্তির চাহিদানুযায়ী উৎপাদন না হওয়া পর্যন্ত প্রচলিত জ্বালানি শক্তির উপর নির্ভর না করে উপায় নেই। তাই প্রচলিত জ্বালানি শক্তির কার্বন নিঃসরন ও অপচয় কমাতে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি) বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রচলিত শক্তির অগ্রগতি সাধনের জন্য প্রায়োগিক গবেষণা ভিত্তিক প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। ফলে প্রচলিত শক্তির উন্নয়নের নিমিত্ত জ্বালানি দক্ষ যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়বে, আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সচেতনতা বাড়বে, জ্বালানি খাতে ব্যয় কমবে, অপচয় রোধ হবে।


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon